ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ১৯৪৬ সালে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলাধীন গয়েশপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবার নাম: খন্দকার আশ্রাফ হোসেন, মাতার নাম: ফজিলতের নেছা। ১৯৬২ সালে দাউদকান্দি হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক, ১৯৬৪ সালে চট্রগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে এইচ.এস.সি এবং ১৯৬৮ সালে ভূতত্ত¡ বিদ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূতত্ত¡ বিভাগে শিক্ষকতায় যোগদান করেন এবং উচ্চতর শিক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে কলম্বো প্লান স্কলারশীপ লাভ করে একই বছর যুক্তরাজ্যে গমন করেন। ১৯৭০ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে এমএসসি ডিগ্রি, ১৯৭৩ সালে ডিআইসি ডিপ্লোমা এবং ১৯৭৪ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত¡ বিভাগে সহকারী অধ্যাপক, ১৯৭৯ সালে সহযোগী অধ্যাপক এবং ১৯৮৬ সালে অধ্যাপক পদে নিয়োজিত হন। ১৯৮৭ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ভূতত্ত বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।
জনসেবার পরিধি বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করার জন্য ১৯৯১ সালের জানুয়ারী মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভূতত্ত বিভাগের অধ্যাপক পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ৫ম, ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-২ নির্বাচনী এলাকা থেকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন স্যার ১৯৯১ সাল হতে ২০০৬ সাল পর্যন্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে দাউদকান্দি মেঘনা উপজেলায় উন্নয়নের অনেক স্মৃতি রেখে যান যা তাকে এই এলাকার জনগণের কাছে চির অমর করে রাখবে। ২০০৩ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৫৬তম সভাপতি নির্বাচিত হয়ে জাতির জন্য বয়ে আনেন অনেক সম্মান।
বিশ্বব্যাপী তামাক বিরোধী আন্দোলনে অসাধারণ ভূমিকার জন্য ৫৭তম বিশ্বস্বাস্থ্য সম্মেলনে তাঁকে “World No Tobaccoo Award” এ ভূষিত করা হয়। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবা খাতের উন্নয়নে অবদানের
স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি ২০০৪ সালে “সরোজনী নাইডু গোল্ড মেডেল” এবং দাউদকান্দিতে প্লাবন ভূমিতে মৎস্য চাষের নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবনের জন্য “জাতীয় মৎস্য পক্ষ স্বর্ণপদক” লাভ করেন।
তিনি রাজনীতির পাশাপাশি একজন লেখক, গবেষক ও বিদ্যানুরাগী। তাঁর প্রমাণ পাওয়া যায় ২১টি গবেষনামূলক প্রবন্ধ লিখার মাধ্যমে যা দেশে ও বিদেশের বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
তাঁর রচিত বইয়ের নাম সমূহঃ
১) মুক্তিযুদ্ধে বিলাত প্রবাসীদের অবদান।
২) প্লাবন ভূমিতে মৎষ্য চাষ, দাউদকান্দি মডেল।
৩) এই সময়ের কিছু কথা।
৪) রাজনীতির হালচাল
৫) সংসদে কথা বলা যায়
৬) মইনুদ্দিন ও ফখরুদ্দিনের ২ বৎসর
ড. মোশাররফ ফাউন্ডেশন লিমিটেডের সংক্ষিপ্ত পরিচয়
২০০২ সালে ড. মোশাররফ ফাউন্ডেশন লিমিটেড প্রতিষ্ঠিত হয়।
রাজনীতির পাশাপাশি শিক্ষার প্রসার, বেকার সমস্যার সমাধান, স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন । যার নাম ড. মোশাররফ ফাউন্ডেশন লিমিটেড। এর মাধ্যমে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, এতিমখানা মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃত্তি প্রদান ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা ও আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। এলাকার জনগণের কল্যানার্থে ড. মো. ফা. লি. এর অর্থায়নে
১। দাউদকান্দি পৌরসভায় ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন কলেজ।
২। ইলিয়টগঞ্জে ড. মোশাররফ ফাউন্ডেশন কলেজ।
৩। গৌরীপুরে বিলকিস মোশাররফ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।
৪। নৈয়ার ড. খন্দকার মোশাররফ হাই স্কুল।
৫। সোনাকান্দা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এতিম খানা ও মাদ্রাসা।
৬। তিতাস উপজেলায় গোপালপুর ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন হাইস্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।
Copyright © 2022 All rights Reserved
Powered by: Rapid IT